ছোলা ভুনা রেসেপি ঝটপট রান্নার উপায়

রোজা ছারাও বিকেলের নাস্তায় ছোলা মুড়ি অনেক বিখ্যাত। ছোলা খুবই শক্তিশালী ও সাস্থ্য সম্মত খাবার। তাহলে দেখে নেওয়া যাক কি কি লাগছে ছোলা ভুনা করতে-

ছোলা ভুনা রেসেপি ঝটপট রান্নার উপায়

  • ছোলা- ২৫০ গ্রাম(সিদ্ধ)
  • আলু -১ টি (সিদ্ধ)
  • পেয়াজ কিউব – ১ কাপ
  • কাঁচামরিচ – পরিমাণ মতন
  • সয়াবিন তেল- ১ কাপ
  • আদা বাটা- ১ চা চামচ
  • রসুন বাটা – ১ চা চামচ
  • জিরা বাটা- ১ চা চামচ
  • জিরা গুড়া – হাফ চা চামচ(নামানোর আগে দিতে হবে)
  • গরম মসল্লা গুড়া- হাফ চা চামচ( নামানোর আগে দিতে হবে)
  • তেয়াজপাতা- ২ টা
  • এলাচ – ৩ টা
  • দারুচিনি- ২ টা
  • শুকনা মরিচ( আস্ত)-৩ টা
  • হলুদ গুড়া- হাফ চা চামচ
  • মরিচ গুড়া- ১ চা চামচ
  • ধনিয়া গুড়া – ১ চা চামচ
  • লবন – সাদ মতন
  • পাকা টমেটো -২ টা
  • পানি – বড় ১ কাপ
  • ধনিয়াপাতা কুচি- পরিমাণ মতন

উপকরন গুলো সব রেডি – তা হলে আমারা আমাদের ছোলা ভুনা রান্নায় চলে যায়

প্রস্তুত প্রণালী : কড়াইতে তেল গরম করে পেয়াজ ভেজে এক এক করে ধনিয়াপাতা বাদে বাকি সব মসল্লা কসিয়ে একটু পানি দিয়ে আলু সেদ্ধ গালিয়ে বা চেটকিয়ে কসিয়ে ছোলা ঢেলে দিয়ে কিছু সময় নাড়াচাড়া দিয়ে পানি দিয়ে ঢেকে দিন। ১০ মিনিট পর ঢাকনা খুলে টমেটো এবং ধনিয়াপাতা দিয়ে নেড়ে জিরা আর গরম মসল্লা গুড়া দিয়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন।

 

আমাদের খাবারই আমাদের অসুস্থ্যতার কারণ !

খাবার তো আমরা সব সময়ই খাই, সব খাবারই কি শরীরের জন্য উপকারি ? সুস্থ থাকতে যেসব পুষ্টি উপাদান দরকার, তা কেবল ‘নিরাপদ খাবার’ থেকেই আমরা পেয়ে থাকি। শুধু সঠিক খাবার নির্বাচনের মাধ্যমেই আমরা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারি। আর এটি বৃদ্ধি পেলে যেকোনো রোগ–জীবাণুর বিরুদ্ধের লড়াই করা সম্ভব হবে। তাই শরীরের ‘ফাইটিং মোড’ সচল রাখতে আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অবশ্যই কিছু পুষ্টি উপাদান রাখতেই হবে। এ জন্য প্রথমেই আমরা কি খাচ্ছি এবং সেটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটুকু দরকারি, সে খাবার থেকে কতটুকু পুষ্টি অথবা শক্তি পাব সেটি ভাবতে হবে। কারণ খাদ্য, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি এই তিনটি শব্দ একটি আরেকটির সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত। সুস্বাস্থ্য ও সুস্থ মনের জন্য প্রতিদিন পুষ্টিকর ও সুষম খাদ্যের প্রয়োজন। দেহের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে হলে একজন ব্যক্তির জন্য সুষম খাদ্য নিবার্চন, খাদ্যের সহজলভ্যতা ও পুষ্টিমূল্য বজায় রেখে খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়া অথৈর্নতিক অবস্থা, খাদ্য উৎপাদন, খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থা, খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদির ওপরও পুষ্টি অনেকটাই নিভর্র করে।

মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে প্রধান চাহিদাটা হলো খাদ্য। সুস্থ, সুন্দর আর স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য যে খাদ্য মানুষ খায়, সেই খাদ্য ভেজালবিহীন হওয়া বাঞ্ছনীয়। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ দিনের পর দিন ভেজাল খাদ্য খেয়ে জটিল ও মারাত্মক সব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। দেশজুড়েই চলছে এই ভেজাল উৎসব। ক্রেতা অধিকার সম্পর্কে দেশের মানুষের অজ্ঞতা, ভেজালবিরোধী আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগের অভাব এবং নৈতিকতার অবক্ষয়ের কারণে দেশের একটি চক্র অধিক মুনাফার আশায় দিনের পর দিন খাদ্যে ভেজাল দিয়ে জনজীবনকে তথা জাতিকে মারাত্মক হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।

খাদ্যের কয়েকটি উপাদান যেমন- শকর্রা, আমিষ, ভিটামিন, খনিজ লবণ ও পানি শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করাই হলো সুষম খাবার। শকর্রা শরীরে শক্তি ও কাযর্ক্ষমতা জোগায়। চাল, গম, যব, আলু, মিষ্টি আলু, কচু, চিনি, মধু, গুড় ইত্যাদিতে প্রচুর শকর্রা পাওয়া যায়। প্রতিগ্রাম শকর্রা থেকে ৪ কিলো-ক্যালোরি শক্তি পাওয়া যায়। প্রোটিন হলো দেহ গঠন ও ক্ষয় পূরণকারী খাদ্য। মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, বিভিন্ন ডাল, বরবটি, শিম, মটরশুঁটি ইত্যাদি দেহ গঠনে সহায়তা করে। প্রতিগ্রাম প্রোটিন থেকে ৪ কিলো-ক্যালোরি শক্তি পাওয়া যায়। চবির্ বা ফ্যাট দেহের কমর্দক্ষতা বজায় রাখে এবং ত্বক সুন্দর ও মসৃণ রাখে। সয়াবিন তেল, সরিষার তেল, তিলের তেল, ঘি, মাখন, চবির্যুক্ত মাছ, মাংস, ডিম ও কলিজা ইত্যাদি চবির্যুক্ত খাদ্য। প্রতি গ্রাম চবির্ থেকে ৯ কিলো-ক্যালোরি শক্তি পাওয়া যায়। পানি শরীরকে পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা করে এবং শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখে। দিনে কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা দরকার।

এ ছাড়া বিভিন্ন ফলের রস, পানি জাতীয় খাবার গ্রহণ করা দরকার। আশঁ দেহের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ওজন নিয়ন্ত্রণ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, অন্ত্রনালির সুস্থতা বজায় রাখে। খাদ্যের আঁশ উদ্ভিজ খাদ্য থেকে পাওয়া যায়। যেমন-লাল আটা, যব, ভুট্টা, যবের ছাতু, শিম, শিমের বিচি, ডাল ও ডালজাত খাদ্য, খোসাসহ ফল যেমন-কালোজাম, আঙুর, পেয়ারা, আপেল, নাশপাতি ও সব ধরনের শাক-সবজি। খনিজ লবণ যেমন-ফসফরাস, লৌহ, আয়োডিন, জিংক যা দেহ গঠন, ক্ষয় পূরণ, পরিপোষণ, দেহের শরীরবৃত্তীয় কাজ করে। আয়োাডিন গলগন্ড রোগ প্রতিরোধ করে। লৌহ রক্তস্বল্পতা দূর করে; হাত ও দাঁতের গঠন মজবুত করে। জিংক মানসিক বৃদ্ধি ও হাড়ের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

ভিটামিন এ, ডি, ই, কে, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, সি-সব রকমের সবুজ ও রঙিন শাক-সবজি, ফল, টকজাতীয় ফল, ডিম, দুধ, কলিজা, ছোট মাছ, লেবু চা ইত্যাদি খাদ্যে ভরপুর এবং রোগ প্রতিরোধকারী খাদ্য। ভিটামিন ‘এ’ রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। ভিটামিন ‘ডি’ রিকেট রোগ প্রতিরোধ করে। ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্স ত্বকের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে। ভিটামিন ‘সি’ স্কাভির্ রোগ প্রতিরোধ করে।

আজকের শিশু আগামী দিনের নাগরিক। শিশুর জন্য জন্মের ৬ মাস পযর্ন্ত মায়ের দুধই যথেষ্ট এবং ৬ মাস থেকে ২ বছর পযর্ন্ত মায়ের দুধের পাশাপাশি আথির্ক সামর্থ অনুযায়ী অধিক পুষ্টিকর পরিপূরক খাবার দিতে হবে। সেই সঙ্গে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত পরিবেশে খাদ্য পরিবেশন করা হয়। অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশু, মা ও বৃদ্ধরা পরিবারের জন্য অথৈর্নতিক ও মানসিক বিপযর্য় ডেকে আনে। শিশু মৃত্যুর কারণ হিসেবে পেটের অসুখ, হাম, নিউমোনিয়া ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুর মধ্যে দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি না ঘটার কারণে আত্মকেন্দ্রিকতা, অবসাদ, ব্যক্তিত্বহীনতা দেখা যায় এবং মেধাশক্তি বিকশিত হতে পারে না। ফলে এসব ছেলেমেয়ে অলস ও উদাসীন, পরনিভর্র নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠে।

সঠিক রান্নার পদ্ধতি, নিদির্ষ্ট সময়ে খাওয়া ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা সবই স্বাস্থ্য ও পুষ্টিকে প্রভাবিত করে। মারাত্মক পুষ্টিহীন শিশুদের শুধু ডাল, আলু, সবুজ তেল দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাইয়ে অতি অল্পসময়ের মধ্যে স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানো সম্ভব। শিশুর পুষ্টির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ন্ত ও কৈশোর বয়সের ছেলে-মেয়েদের পুষ্টির দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। শারীরিক, মানসিক, সামাজিক সব ক্ষেত্রেই পরিবতর্ন চুড়ান্ত। তাই পুষ্টির চাহিদাও এ সময়ের পরিবতের্নর ওপর নিভর্রশীল। এ বয়সে মেয়েদের অপুষ্টি বেশি দেখা যায়। কিশোর-কিশোরীদের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন ও ক্যালোরির চাহিদা পূরণ করতে হয়। পরিমিত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ, বিশুদ্ধ পানি, নিয়মিত শারীরিক শ্রম, বিশ্রাম, খেলাধুলা ইত্যাদি বিষয়ের ওপরও নজর দিতে হবে।

মায়ের পুষ্টি শিশুর তুষ্টি। অথার্ৎ সুস্থ ও স্বাস্থ্যবতী মা-ই কেবলমাত্র স্বাস্থ্যবান সন্তানের জন্ম দিতে পারে। পুষ্টিহীন মায়ের সন্তানের জন্মকালীন ওজন কম এবং অসুস্থ, হাবাগোবা, রুগ্ণ হয়ে জন্মায়। পরে নানা রোগে ভোগে। প্রসূতি মায়েদেরও নানা রকম জটিলতা দেখা যায়। গভর্বতী ও স্তন্যদাত্রী অবস্থায় মায়েদের খাবারের প্রয়োজন সাধারণ অবস্থার চেয়ে বেশি থাকে। এ সময় প্রয়োজন অনুযায়ী ফলিক অ্যাসিড, আয়োডিন, ক্যালসিয়াম ও আয়রন, জিংকসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। অনেক সময় পুষ্টি সম্পর্কে ধারণা না থাকার ফলে পুষ্টির অভাবে নিজের চাহিদার ঘাটতির সঙ্গে সন্তানও পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের ঘাটতি নিয়ে জন্মায়। মাকে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, বিভিন্ন রঙিন শাকসবজি, ফল, টকজাতীয় ফল, পানি ও পানিজাতীয় খাবার প্রয়োজন অনুযায়ী খেতে হবে। তা ছাড়া এ সময় চিন্তামুক্ত ও আনন্দভাব নিয়ে থাকতে হবে। অনেক সময় কুসংস্কার ও ভ্রান্ত ধারণা মায়ের অপুষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

অন্যদিকে বৃদ্ধ বয়সেও স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য পুষ্টির চাহিদা রয়েছে। বয়স বাড়লে খাবারের চাহিদা, হৃৎপিন্ডের কাযর্ক্ষমতা, পরিপাকতন্ত্রের কাযর্ক্ষমতা, চেতনতন্ত্রের কাযর্ক্ষমতা কমে যায়। রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। দাঁত-হাড়ের সমস্যা ও বাত-ব্যাধি দেখা দেয়। এ বয়সে সাদা আটা, চাল, চিনি ময়দা ইত্যাদি খাবার কম খেতে হবে। তেল, চর্বি, লবণ, মিষ্টি ক্যাফেন সমৃদ্ধ খাবারও কম খেতে হবে। এ সময়ে পানি ও পানিজাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে। হজমে সহায়ক, কোষ্ঠকাঠিন্যরোধক, বাত ও ওজন নিয়ন্ত্রক খাবার খেতে হবে। লাল আটা, বিভিন্ন আঁশ জাতীয় শাক-সবজি, ফল, চবির্হীন মাছ-মাংস ইত্যাদি খাবার খেতে হবে। প্রয়াজনে নিয়মিত হাটতে হবে। না হলে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা, বাত, চোখের রোগ ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। বয়স চল্লিশের পর থেকে ডিমের কুসুম, ঘি, মাখন, অতিরিক্ত চবির্যুক্ত মাছ, মাংস, শকর্রাজাতীয় খাওয়া কমাতে হবে। বৃদ্ধবয়সে ক্যালসিয়াম ও লৌহের অভাব বেশি দেখা যায়। সর তুলে দুধ, দুধের তৈরি খাবার, পনির, পায়েস ইত্যাদি খাওয়া যায়। পুষ্টির সমস্যার জন্য অজ্ঞতা ও অসেচতনতাও দায়ী। বাজারের টিন ও প্যাকেটজাত খাবার থেকে বাড়িতে তৈরি খাবার অনেক বেশি পুষ্টিকর। যে দেশের জনগণের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির অবস্থা যত ভালো, সে দেশ তত বেশি উন্নত। সুষম পুষ্টিকর খাবারই সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে পারে।

বতর্মানে শিক্ষার হার বৃদ্ধির ফলে গ্রাম পর্য়ায়ে জনগণও অনেক বেশি স্বাস্থ্য সচেতন হয়েছে। সেই সাথে আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতির ফলে গ্রামে টেলিভিশনের প্রাপ্যতা অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। একটা সময় রেডিও ছিল গ্রামের মানুষের তথ্য প্রাপ্তির সবচেয়ে সহজ মাধ্যম। রেডিও শুধুমাত্র শ্রবনযোগ্য একটি যোগাযোগের মাধ্যম। সেই বিবেচনায় টেলিভিশন অধিকতর প্রভাবশালী একটি গণমাধ্যম কারণ এতে একই সাথে শোনা ও দেখা যায়। তাই টেলিভিশনে দেখানো একটি তথ্যেও প্রভাব মানুষের ওপর বেশি পড়ে। আর দৈনিক পত্রিকা সৃষ্টিলগ্ন থেকেই তথ্য প্রদানের একটি বিশ্বাসযোগ্য ও গুরুত্বপূণর্ মাধ্যম হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে। যেহেতু বাংলাদেশ এখন খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ তাই আমাদের এখন পুষ্টিতে স্বয়ংসম্পূণর্তার দিকে বিশেষ বিবেচনা দেয়া উচিত।

সার্বিকভাবে দেখা যায়, বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে উদ্বৃত্ত হলেও পুষ্টি নিরাপত্তার দিক থেকে পিছিয়ে আছে। অথচ, বাস্তবে আমরা দেখছি পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের জন্য খাদ্যের এ সব উপাদান বহনকারী মাছ, মাংস, ডিম, ফল, সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ অনেকদূর এগিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ অবস্থায় চলে এসেছে। অর্থাৎ সুষম খাদ্যের ছয়টি প্রধান উপাদান কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, খনিজ লবণ এবং পানির কোনোটিরই তেমন অভাব দেখছি না। তাই স্বীকার করতেই হবে সুষম খাদ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে আমাদের জানার অভাব রয়েছে এবং খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনে অনীহা আছে। আমরা যখন খাদ্য গ্রহণ করি তখন পুষ্টিকর কি না, তা চিন্তা না করে মুখোরোচক হলো কি না, তাতে বেশি গুরুত্ব দেই। এজন্য দেখা যাচ্ছে হাতের কাছে অনেক পুষ্টিকর খাবার থাকার পরেও আমাদের সচেতনতার অভাবে তা গ্রহণ করি না। এছাড়া আমাদের রন্ধনপ্রণালির মধ্যেও পুষ্টিমান বজায় রাখার ক্ষেত্রে ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়।

আশার কথা সম্প্রতি বাংলাদেশ পুষ্টি পরিস্থিতির ক্ষেত্রে অগ্রগতির দিকে ধাবিত হচ্ছে, যেমন- পুষ্টিহীনতার প্রবণতা ক্ষুধা পর্যবেক্ষণে ব্যবহৃত সূচকের হার ১৯৯৯- ২০০১ সময়ে গড়ে ২০ দশমিক ৮ থেকে হ্রাস পেয়ে ২০১৭-১৯ সময়ে গড়ে ১৩ তে উপনীত হয়েছে। একইভাবে ২০০৪ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের মধ্যে খর্বতার (stunting) হার ৫১ শতাংশ থেকে কমে ২৮ শতাংশ এবং কৃশকায়তায় শতকরা ১৫ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ এবং কম ওজনের শিশুর হার ৪৩ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ২২ দশমিক ৬ শতাংশ হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশ সরকার সম্প্রতি জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নীতি ২০২০ প্রণয়ন করেছে।

সরকার এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি যৌথভাবে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি চালু করে যা বর্তমানে দেশের ১০৪টি উপজেলায় সম্প্রসারিত হয়েছে। এ কর্মসূচির আওতায় ৩২ দশমিক ৩৮ লাখ প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের বিশেষভাবে প্রস্তুতকৃত উচ্চ প্রোটিনসমৃদ্ধ বিস্কুট সরবরাহ করা হচ্ছে। জাতীয় স্কুল মিল্ক নীতিমালা ২০১৯ প্রণয়ন করা হয়েছে যার মাধ্যমে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় গমন উপযোগী শিশুদের পুষ্টির মান উন্নয়নে অবদান রাখবে আশা করা যায়। নিঃসন্দেহে এগুলো সাম্প্রতিককালে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনে বাস্তব পদক্ষেপ এবং সফলতার পরিচয় বহন করে।

তবে এখানে আÍতুষ্টির কিছু নেই। পুষ্টি এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে গ্লোবাল ফুড সিকিউরিটি ইনডেক্স (FSI) এবং গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সে (HI) বাংলাদেশের অবস্থান ইতিপূর্বে যা তুলে ধরেছি তাতে আমাদের এই অবস্থান থেকে উত্তোরণের জন্য আরো অনেকদূর এগিয়ে যেতে হবে।

সার্বিকভাবে অবস্থা মোকাবিলা করার জন্য নিম্নরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে:

১। বাংলাদেশের ডায়েটে প্রোটিনের স্বল্পতা অত্যন্ত দৃশ্যমান। বিশেষ করে নিম্নআয়ের জনগোষ্ঠীর খাদ্য তালিকায় প্রোটিনের অভাব পরিলক্ষিত হয়। তাই তাদের প্রোটিন সরবরাহের জন্য মাছ-মাংসের পাশাপাশি মাশরুম, বিভিন্ন ধরনের ডাল, বাদাম ইত্যাদি খাবার হিসেবে গ্রহণের জন্য উৎসাহিত করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে সংশি­ষ্ট বিভাগের সম্প্রসারণ কর্মীগণ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেন।

২। অনেক প্রতিষ্ঠান পুষ্টিহীনতা নিয়ে কাজ করছে, তবে পুষ্টি কার্যক্রমে অবদান রাখার জন্য ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকেও এগিয়ে আসা উচিত। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, ফর্টিফাইড রাইস যেখানে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট রয়েছে তা সাধারণ মানুষের কাছে এখনো ততটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেনি। তাই ফর্টিফাইড রাইস বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসতে পারে।

৩। খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তাহীনতা থেকে দরিদ্র মানুষকে রক্ষা করার জন্য সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে চাল ছাড়াও অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।

৪। মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের ঘাটতি কমানোর জন্য শাকসবজি একটা অনন্য ভ‚মিকা পালন করে থাকে। জমির যেহেতু স্বল্পতা রয়েছে তাই ভার্টিক্যাল ফার্মিংয়ের দিকে নজর দিতে হবে। যাতে বসতবাড়িসহ নিজস্ব জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত হয়।

৫। পুষ্টিযুক্ত শিশুখাদ্য গ্রহণের ব্যাপারে প্রত্যেকটি পরিবারকে সচেতন করার পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানি ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

৬। উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, কৃষি বহুমুখীকরণ, টেকসইভাবে কৃষি নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ এবং পুষ্টি কার্যক্রমসমূহের প্রকল্পে উন্নত ও জলবায়ু উপযোগী প্রযুক্তির বিকাশ ঘটিয়ে মাঠ পর্যায়ের সম্প্রসারণ ও অভিযোজন করা প্রয়োজন।

৭। পুষ্টি সংবেদনশীল খাদ্য ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় বেসরকারি খাতকে সহযোগিতা করার জন্যে দুর্বল বিপণন অবকাঠামো ও ব্যবস্থাপনাকে সংস্কার করা অতি জর“রি।

৮। নিরাপদ খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে নিরাপদ খাদ্য আইন ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে খাদ্যে ভেজাল নিয়ন্ত্রণ অভিযোগ প্রতিকারের বিষয়টি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সমাধান করা।

৯। সর্বোপরি নিরাপদ ও গুণাগুণসম্পন্ন খাদ্যের ব্যাপক প্রচারের জন্য সরকারের পাশাপাশি অন্যান্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানকে আরো এগিয়ে আসতে হবে।

খাদ্য উৎপাদনে দেশের ব্যাপক সফলতা সত্ত্বেও প্রায় ১৭ কোটি মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়ে বাংলাদেশ কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে। উপরন্তু ২০৩০ সালের মধ্যে জনসংখ্যা ২০ কোটি ছাড়িয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও ভবিষ্যতের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাতসহ কিছু নেতিবাচক প্রবণতা, ক্ষুধার অবসান, খাদ্য নিরাপত্তা ও উন্নত পুষ্টিমান অর্জন এবং টেকসই কৃষি প্রসারে বর্তমানে চ্যালেঞ্জগুলোকে আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে এমন আশঙ্কা আছে। তাই সরকারের সংশি­ষ্ট মন্ত্রণালয়, উন্নয়ন সহযোগী ও সব অংশীজনের সমন্বয়, সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও পুষ্টি চাহিদা প্রচেষ্টায় সংশি­ষ্ট সবাইকে আরো জোরদার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।

সরকার সুষম খাবার, খাদ্য ও পুষ্টি বিষয়ে যে জোর দিয়েছে তা বাস্তবায়ন সম্ভব একমাত্র সাধারণ জনগণকে সচেতন করার মাধ্যমে। জাতীয় গণমাধ্যমগুলো সাধারণ জনগণের মধ্যে পুষ্টি বিষয়ক এই তথ্যসমূহ যথাযথ প্রচারের মাধ্যমে সঠিক যোগাযোগের একটি সেতুবন্ধন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ।

Ramadan Special 2021

রমজানে শরীরকে সুস্থ রাখার টিপস!!

পরম করুনাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে। বছর পেরিয়ে আবার এলো পবিত্র মাহে রমজান। অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ন এ মাসে যথাসম্ভব ইবাদত বন্দেগি করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই প্রত্যেকের কাম্য। বেশি বেশি ইবাদত করার জন্য চাই সুস্থ দেহ আর সুস্থ দেহ পাবার অন্যতম শর্ত হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাদ্য ও পানীয় গ্রহন। তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে রমজানের স্বাস্থ্য টিপস নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা।

আপনার প্রতিদিনের গ্রহন করা খাদ্য স্বাস্থ্যসম্মত হচ্ছে কি না বা আপনার দেহের ক্ষয় পূরণের জন্য পর্যাপ্ত কি না; নিশ্চিত হওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় একটি সুষম খাদ্যের তালিকা তৈরি করা এবং সে তালিকা অনুযায়ী প্রতিদিন খাবার গ্রহন করা। তাই এখনো যারা রমজানের খাদ্য তালিকা তৈরি করবো বলেও তৈরি করেন নি; আশা করা যায় এ লেখা কিছুটা হলেও তাদের সাহায্য করবে। আর যারা ইতিমধ্যে তৈরি করে ফেলেছেন, তারা চাইলে একটু মিলিয়ে দেখতে পারেন।

খাদ্য তালিকায় যা রাখতে পারেনঃ

* প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই লিটার পানি পান করা উচিত। যা এ রমজানের মধ্যে ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত সময়টাতে পান করা প্রয়োজন।

* উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশী পরিমানে গ্রহণ করা ভালো।

* কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খাদ্য তালিকা থেকে একেবারে বাদ না দিয়ে প্রতিদিন স্বল্প পরিমাণে গ্রহণ করা দরকার।

* এ সময় বেশী বেশী পটাসিয়ামযুক্ত খাবার গ্রহণ দেহের জন্য অপরিহার্য।

* বাজার এখন নানান মৌসুমী ফলে ভরপুর। যত বেশী সম্ভব আমরা ফল খেতে পারি। ফল একদিকে শরীরের পানির চাহিদা মেটাবে, অন্যদিকে এর প্রয়োজনীয় অনেক পুষ্টিগুনও রয়েছে।

* দুধে অ্যালার্জি বা হজমের সমস্যা না হলে প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে পান করা যেতে পারে। দুধ স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাধিক উপকারী।

* ফাইবার বা আঁশ জাতীয় খাবার যেমন ইসবগুল, তকমা, সালাদ এ সময়টাতে বেশি বেশি গ্রহণ করা দরকার।

যে খাদ্য বা অভ্যাসসমূহ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারেঃ

* ভাজাপোড়া খাবার সম্পূর্ন ভাবে বর্জন করাই শ্রেয়।

* এ সময়টাতে বা যে কোনো সময়ে বাইরের কেনা খাবার না খাওয়াই স্বাস্থ্যসম্মত।

* ইফতার, রাতের খাবার বা সেহেরী সাধারণ সময়ের চেয়ে বেশি খেয়ে হাসফাস না করে, স্বাভাবিক পরিমাণে খাওয়াটাই উত্তম।

* কোল্ড ড্রিংকস, প্যাকেটজাত জুসের পরিবর্তে বাড়িতে তৈরি তাজা ফলের শরবত খাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

* ফাস্টফুড সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে যাওয়া ভালো।

* এ সময়টাতে চা, কফি না খাওয়াই ভালো। তবে একান্তই খেলে তা ইফতার এবং রাতের খাবারের মাঝে খেতে হবে, কেননা চা, কফি শরীর থেকে পানি বের করে দিয়ে পানি শূন্যতা তৈরি করে।

তবে যাদের শারীরিক কোনো সমস্যা বা অন্য কোনো কারনে ডাক্তারের সান্নিধ্যে থাকতে হয়, তাদের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চলা উত্তম। যে সকল গর্ভবতী মায়েরা আছেন, তারা সুস্থ অবস্থায় থাকলে সুষম খাদ্য ও প্রচুর পরিমানে পানি পান করে সহজেই রোজা রাখতে পারেন। তবে কোনো মায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে অবশ্যই আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া দরকার।

যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত আছেন তাদের না খেয়ে বা অল্প খেয়ে রোজা রাখতে হবে এমন কোনো কথা নেই। কিন্তু অবশ্যই ডায়াবেটিক ফুড খাবেন। বিশেষ করে সেহেরীতে চাইলে পর্যাপ্ত খাবার গ্রহণ করতে পারেন, কিন্তু অবশ্যই তা ডায়াবেটিস ফুড হতে হবে।

রোজার সময়টাতে খাদ্য ও পানীয় গ্রহনে হঠাৎ বড় একটি পরিবর্তন হয়। অনেক সময়ই দেখা যায় কারো কারো শরীর তা সহ্য করতে না পেরে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তাই এ সময়টাতে নতুনভাবে কোনো ডায়েট গ্রহণ করা উচিত নয়। যারা আগে থেকেই নির্দিষ্ট কোনো ডায়েটে অভ্যস্থ, তাদের কথা আলাদা।

ব্যায়ামের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। যারা ব্যায়াম করে অভ্যস্থ তাদের জন্য এ মাসে দিনে ব্যায়াম না করাই শ্রেয়। কারণ শারীরিক কসরতের পর পানি পিপাসা অনেক বেশী অনুভূত হয়। এমনকি ইফতারের আগেও ব্যায়াম নয়। সবচেয়ে ভালো উপায়, হালকা ইফতার করে প্রয়োজন মতো ব্যায়াম করে ভারী রাতের খাবার গ্রহণ করা।

অনেকেরই প্রশ্ন থাকতে পারে ইফতার, রাতের খাবার ও সেহেরী, কোন সময়ে কেমন পরিমানে খাবার ও পানীয় গ্রহন করা উচিত?

ইফতারঃ

সারাদিন সিয়াম সাধনার পর প্রথম খাওয়া হয় ইফতারে। যেহেতু সারাদিন রোজা রাখার পর শরীরের গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়, তাই ইফতার শুরু করা দরকার হজমযোগ্য শর্করা জাতীয় খাবার দিয়ে। চাইলে ইফতারকে দুই ভাগে বিভক্ত করা যায়। প্রথমে একদম হালকা খাবার খেয়ে নামাজের পর তুলনামূলক ভারী খাবার।

সে ক্ষেত্রে শুরুতে খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করে তরল হিসেবে লেবু পানি, ডাবের পানি, লাচ্ছি, গুড়ের শরবত, ঘরের তৈরি ফলের জুস, ইসবগুল বা তোকমার শরবত, রুহ আফজা, ভেজিটেবল বা চিকেন স্যুপ ইত্যাদি রাখা যেতে পারে।

ভিটামিনের ও মিনারেলযুক্ত খাবার হিসেবে ফলমূল ও সবজি বা এগুলো দিয়ে তৈরি খাবার।

কার্বোহাইড্রেট হিসেবে ভাত, রুটি, নুডলস, আলুর চপ, খিচুড়ি, চিড়া, সাগু, মুড়ি ইত্যাদি।

প্রোটিন চাহিদা পূরন করতে সিদ্ধ ছোলা খুব উপকারী। এছাড়াও দুধ, দই, ডিম, মুরগির মাংস ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।

তবে এ খাদ্যসমূহ ইচ্ছামত না খেয়ে পরিমিত পরিমাণে খেতে পারেন এবং অনেক বেশি পানি পান করা প্রয়োজন।

রাতের খাবারঃ

এরপর রাতের খাবার হতে পারে একদমই হালকা। পরিমিত ভাত বা রুটি, সাথে পর্যাপ্ত সতেজ সালাদ, এক টুকরো মাছ বা মাংস এবং সবজি। আবার চাইলে দুধ – ভাত – কলাও খেতে পারেন। তবে অবশ্যই দেহের চাহিদা অনুপাতে।

সেহেরীঃ

সারাদিনের মধ্যে তুলনামূলক ভারী খাবার এসময় গ্রহণ করা শ্রেয়। তবে তা শরীরের চাহিদা বুঝে। আর অবশ্যই ঘরের তৈরি এমন খাবার যা হজমের কোনো সমস্যা সৃষ্টি করে না এবং পানির তৃষ্ণা তৈরি করবে না। সেহেরীতেও সুসিদ্ধ, হজমে সহায়ক খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি করে এমন খাবার এড়িয়ে চলা প্রয়োজন।

তবে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে পানি পানে। ইফতারের পর থেকে প্রচুর পরিমানে পানি পান করতে হবে, যেন কোনো ভাবেই দেহে পানিশূন্যতা দেখা না দেয়। কেমন লাগলো আমাদের রমজানের স্বাস্থ্য টিপস তা কমেন্ট করে জানাবেন।

আসুন প্রতিদিন নিয়ম মেনে খাবার গ্রহন করে সকলে সুস্থ থাকি। যথাসম্ভব ইবাদত করি এবং সাধ্যমতো সমাজের নিম্নআয়ের মানুষ গুলোর পাশে দাড়াই।

Ramadan

রোজার তাৎপর্য ও ফজিলত | Benefits Of Ramadan

রোজার তাৎপর্য ও ফজিলত | Benefits Of Ramadan

রোজা রাখার মধ্যে রয়েছে যথেষ্ট শারীরিক উপকারিতা। বিশেষ করে বছরে এক মাস অভুক্ত থাকলে তা স্বাস্থ্যরক্ষায় বেশ ভূমিকা রাখে। এ জন্য প্রাপ্তবয়স্ক সক্ষম মানুষের উচিত রোজা রাখার অভ্যাস করা।এই বিষয়ে লিখেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল।

হার্ট ভালো থাকে:

রোজা দেহের অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায়। এতে রক্তনালিতে জমে থাকা চর্বির উপাদানগুলো কমতে থাকায় হার্ট ব্লকের মতো ঝুঁকি কমে যায়। তাই যাঁদের ওজন বেশি, যাঁদের রক্তে চর্বির পরিমাণ বা কোলেস্টেরল লেভেল বেশি, তাঁরা রোজা রেখে শারীরিক ওজন কমানোসহ নানা উপকার পেতে পারেন। এতে শরীরের চর্বি এবং মেদ-ভুঁড়ি কমানো যায়, যদি না ইফতার ও সাহরিতে মাত্রাতিরিক্ত গুরুপাক, তৈলাক্ত খাবার খাওয়া হয়।

মস্তিষ্কের কার্যক্রম বৃদ্ধি:

রোজা মস্তিষ্কের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অধিক খাদ্য গ্রহণে শরীরের ওপর যেমন চাপ বৃদ্ধি পায়, তেমনি এই চাপ মস্তিষ্কের ওপরও পড়ে। বিজ্ঞানীরা গবেষণায় দেখেছেন, রোজার মাধ্যমে যে মানসিক পরিবর্তন আসে, তাতে মস্তিষ্ক থেকে এক ধরনের নিউরোট্রিফিক ফ্যাক্টর নিসৃত হয়, যা অধিক নিউরন তৈরিতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ হয়:

গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য রোজা যথেষ্ট উপকারী। কারণ রোজা রাখা অবস্থায় দেহে নানা ধরনের ইনসুলিন তৈরি হয়, যা ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য বেশ উপকারী।

কিডনি ভালো থাকে:

কিডনির মাধ্যমে শরীরে প্রতি মিনিটে এক থেকে তিন লিটার রক্ত সঞ্চালিত হয়। কিডনির কাজ হলো শরীরের বর্জ্য পদার্থগুলো প্রস্রাব আকারে মূত্রথলিতে প্রেরণ করা। রোজা অবস্থায় কিডনি বিশ্রাম পায়। ফলে এ সময় কিডনি বেশ সক্রিয় হয়ে ওঠে।

লিভারের ওপর প্রভাব:

রোজার সময় সাহরিতে যে খাবার গ্রহণ করা হয়, তা থেকে ও লিভারে সঞ্চিত গ্লাইকোজেন থেকে সারা দিনের উপোসের সময় রক্তে প্রয়োজনীয় খাদ্য-উপাদান সঞ্চালিত হয়। লিভারের গ্লাইকোজেন স্টোরেজ শেষ হয়ে গেলে লিভার ও অ্যাডিপোজ টিস্যুতে জমা চর্বি বিপাকের মাধ্যমে রক্তে গ্লুকোজ সরবরাহ হয়। ফলে রমজানে একজন রোজাদারের জন্য লিভারের ফ্যাট ও শরীরের বাড়তি ওজন কমার সুযোগ তৈরি হয়। যাঁদের লিভারে ফ্যাট জমা হয়েছে, তাঁদের জন্য রোজা রাখা উত্তম।

ধূমপান ছেড়ে দেওয়া যায়:

ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকে ধূমপান ছাড়তে পারেন না। তাঁদের জন্য রমজান মাস উত্তম সময়। এই মাসে ধূমপানের মতো ক্ষতিকর ও বদ-অভ্যাসগুলো ত্যাগ করুন বা কমিয়ে দিন।

পরিপাক প্রক্রিয়া কার্যকর হয়:

রোজার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ সময় ক্ষুধা নিবারণ হয় না; বরং ধীরে ধীরে ক্ষুধার প্রশিক্ষণ হয়। ফলে রমজান শেষে ক্ষুধার মাত্রাও কমে আসে। খাদ্যনালির পরিপাক প্রক্রিয়া আরো কার্যকর হয়ে ওঠে, খাদ্যদ্রব্য থেকে বেশি পুষ্টি উপাদান সংগ্রহ সম্ভব হয়।

তাছাড়া রোজা রাখার ফলে আগের চেয়ে আরো দক্ষভাবে কাজ করতে শুরু করে পাকস্থলী। সবল হয় হজমযন্ত্র। ইফতারে পুষ্টিকর উপাদানগুলোকে খুব সহজেই গ্রহণ করে শরীর। অ্যাডিপোনেকটিন নামের হরমোন বৃদ্ধি পায়, যা মাংসপেশিগুলোকে খাবার থেকে আরো বেশি পুষ্টিকর উপাদান শোষণে সক্ষম করে তোলে।

জটিলতা এড়ানো যায়:

রোজা একজন মানুষের শুধু পাকস্থলী বা হৃৎপিণ্ডকে সক্রিয়ই রাখে না; বরং অন্য অনেক রোগের জন্যও উপকারী। বিশেষ করে রোজার সময় ধূমপান ও নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন বন্ধ থাকে বিধায় ক্যান্সার, হার্ট ফেইলিওর, স্ট্রোকের মতো জটিল রোগগুলোর আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

তাই যাঁদের শারীরিক সামর্থ্য ও ইচ্ছা রয়েছে, তাঁরা রমজান মাসের রোজাগুলো নিয়মমতো রাখতে পারেন।

ওজন কমাতে সাহায্য করে:

বাড়তি ওজন যাদের, তারা এইসময়ে বিশেষভাবে উপকৃত হয়। যেহেতু এইসময় মানুষ নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলে, সকাল এবং সন্ধ্যেয় স্বাস্থ্যকর ডায়েট অনুসরণ করে, যেমন- স্যুপ, রুটি, খেজুর এবং অন্যান্য ফল, যা দ্রুত ওজন হ্রাস করতে সহায়তা করে। চিনি এবং চর্বিযুক্ত খাবার এড়ানো হয় বদলে তাজা ফল, তাজা শাকসবজি এবং পানি গ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এর ফলে ওজন হ্রাস হয়।

ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে:

রমজানে রোজা রাখার অন্যতম সুবিধা হলো এটি আপনার রক্তে শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। রোজা আপনার গ্লুকোজকে ভেঙে দেয় যাতে শরীর শক্তি পেতে পারে যা ইনসুলিনের উৎপাদন হ্রাস করে।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে:

রোজা এথেরোস্ক্লেরোসিসের ঝুঁকি হ্রাস করতে সাহায্য করতে পারে। দেহ খাদ্য এবং পানি থেকে বঞ্চিত হওয়ার পরেও শরীরে সঞ্চিত ফ্যাট শক্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। রোজার সময় বিপাকের হারও হ্রাস পায়। অ্যাড্রিনালিন এবং ননঅ্যাড্রিনালিন হরমোনগুলির ক্ষরণও হ্রাস পায়; এটি বিপাকের হারকে স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করে, যার ফলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।

পেশীশক্তি সংরক্ষণ করে:

আপনার পেশীগুলিতে সঞ্চিত ফ্যাট ব্যবহৃত হবে। আপনি যখনই কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করেন, তখন গ্লাইকোজেন (ফ্যাট সেল) যুক্ত হয়, যা ওজন বাড়িয়ে তোলে। তবে রমজানের রোজার সময় ফ্যাট কোষগুলি শক্তির উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে:

রোজার সময় মানুষ সাধারণত সেহরি ও ইফতারে মাঝে স্বাস্থ্যকর খাবার খায়। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, টক্সিন নির্মূল করতে এবং চর্বি হ্রাস করতে সহায়তা করে। রোজা ভাঙার জন্য যখন খেজুর এবং ফল খাওয়া হয় তখন এগুলি শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজগুলির সঞ্চয় বাড়ায়। ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ই সমস্ত ফলের মধ্যে উপস্থিত, যা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।

প্রদাহ দূর করে:

রমজানে রোজা রাখার আরেকটি শারীরিক সুবিধা হলো এটি প্রদাহজনিত রোগ এবং অ্যালার্জির সারাতে সহায়তা করে। প্রদাহজনিত রোগের কয়েকটি উদাহরণ হলো- আর্থারাইটিস এবং ত্বকের রোগ যেমন সোরিয়াসিস। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে, রোজার ফলে আলসারেটিভ কোলাইটিসের মতো প্রদাহজনক পেটের রোগ নিরাময়ের উন্নতি হতে পারে।

মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে:

অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে, রোজা কিছু নির্দিষ্ট প্রোটিনের উৎপাদন বাড়িয়ে তুলতে পারে, যা মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপের জন্য উপকারি। এই প্রোটিনগুলো মস্তিষ্কের স্টেম সেলগুলো সক্রিয় করতে সহায়তা করবে যাতে তারা ভালোভাবে কাজ করতে পারে। এই কারণেই আপনি যখন রোজা রাখেন তখন আপনার মস্তিষ্ক সজাগ হয়ে যায়।

মানসিক স্বচ্ছতা দেয়:

রমজানের সময় রোজার আরেকটি মানসিক সুবিধা হলো এটি আপনার শরীরকে খাদ্য এবং পানীয়ের প্রতি কীভাবে আপনার আকাঙ্ক্ষাগুলো নিয়ন্ত্রণ করবেন তা শেখার জন্য প্রস্তুত করে। এই প্রক্রিয়াতে, মস্তিষ্ক সেই অবস্থার সাথে মানিয়ে নেয় এবং কীভাবে আরও ধৈর্যশীল হতে হয় তা শেখায়।

ঐতিহ্যবাহী নেহারি

ঐতিহ্যবাহী নেহারি বা নলা হাঁজি | Recipe Of Nehari

ঐতিহ্যবাহী নেহারি বা নলা হাঁজি | Recipe Of Nehari

উপকরণ-১:

গরুর পায়া (নলা) ৪টি, আদাবাটা ২ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজবাটা ১ কাপ, চিনাবাদামবাটা আধা কাপ, সাদা সরিষাবাটা ২ টেবিল চামচ, পোস্তবাটা ২ টেবিল চামচ, মরিচ গুঁড়া এক টেবিল চামচ, ধনে গুঁড়া ২ টেবিল চামচ, জিরা গুঁড়া ২ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া ২ টেবিল চামচ এবং গরমমসলা ও লবণ পরিমাণমতো।
টকের জন্য: জলপাই, আমড়া বা তেঁতুল স্বাদমতো, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি ও টমেটো ১ কেজি।

উপকরণ-২:

গরমমসলা গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, সয়াবিন তেল ১ কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ ও রসুন কুচি ৩ টেবিল চামচ।

ঐতিহ্যবাহী নেহারি প্রণালি:

গরুর পায়া টুকরা করে ভালোভাবে ধুয়ে ১ নম্বর উপকরণের সব মসলা মেখে নিতে হবে। তারপর ডুবো পানি দিয়ে কয়েক ঘণ্টা সেদ্ধ করতে হবে। পায়ায় লাগানো মাংস ভালো করে সেদ্ধ হয়ে গেলে আঁচ কমিয়ে দিতে হবে। পানি কমে এলে আবার পানি দিতে হবে। এরপর টক, কাঁচা মরিচ ও টমেটো দিতে হবে। অন্যদিকে, আরেকটা সসপ্যানে ২ নম্বর উপকরণের তেল দিয়ে পেঁয়াজ ও রসুন কুচি ভাজতে হবে। এবার পেঁয়াজ, রসুনসহ তেল পায়ার ঝোলে ঢেলে দিতে হবে। গরমমসলার গুঁড়া দেওয়ার পর ঢাকনা দিয়ে পায়া আবার ১০ থেকে ১৫ মিনিট সেদ্ধ করে নামিয়ে নিতে হবে।

নেহারির স্বাদ আরো বাড়াতে স্বদেশী উদ্যোক্তার খাঁটি মসলা ব্যবহার করুণ।

Stay connected: Facebook   LinkedIn

ঐতিহ্যবাহী আখনি বিরিয়ানি

ঐতিহ্যবাহী আখনি বিরিয়ানি রেসিপি | Yakhni Biriyani

ঐতিহ্যবাহী আখনি বিরিয়ানি রেসিপি | Yakhni Biriyani

উপকরণ-১:

চিনিগুঁড়া চাল ২ কেজি, গরুর মাংস ৪ কেজি, পেঁয়াজ কুচি ২ কেজি, রসুনবাটা ২০০ গ্রাম, আদাবাটা ২০০ গ্রাম, সাদা সরিষা ৫০ গ্রাম, চিনাবাদাম ৫০ গ্রাম, নারকেল কুচি ২০০ গ্রাম, মরিচ গুঁড়া ৩ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া ২ টেবিল চামচ, গরমমসলা পরিমাণমতো, টমেটো ১ কেজি, কাঁচা মরিচ ১০-১২টা, তেল ১ কাপ, ঘি ১ কাপ, জিরা গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, ধনে গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, টকদই ২ কাপ, লবণ ও গরম পানি পরিমাণমতো।

উপকরণ-২:

মুখ চেরা এলাচি ১০টি, দারুচিনি (২ ইঞ্চি) ৪ টুকরা, লবঙ্গ ১০টি, জায়ফল ১টি, জয়ত্রী ২ টেবিল চামচ, শাহি জিরা ২ চা চামচ, কেওড়া ২ টেবিল চামচ ও গোলাপজল ২ টেবিল চামচ।

ঐতিহ্যবাহী আখনি বিরিয়ানি প্রণালি:

চাল ও মাংস ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। গরম পানি ছাড়া মাংসে ১ নম্বর উপকরণের মসলা, তেল ও ঘি মেখে চুলায় বসাতে হবে। মাঝারি আঁচে মাংস রান্না করতে হবে। মাঝেমধ্যে নেড়ে দিতে হবে। সেদ্ধ হলে চাল মাংসে ঢেলে দিয়ে পাঁচ মিনিট কষাতে হবে। এবার পরিমাণমতো গরম পানি দিতে হবে। অন্য দিকে উপকরণ–২–এর মসলা তাওয়ায় ভেজে গুঁড়া করে নিতে হবে। চাল ও মাংসের পানি শুকিয়ে এলে গুঁড়া মসলা দিয়ে দমে বসাতে হবে। চাল ফুটে উঠলে কেওড়া ও গোলাপজল দিতে হবে। কিছুক্ষণ দমে দিয়ে নামিয়ে নিতে হবে। বড় পাত্রে আখনি বিরিয়ানি নিয়ে বেরেস্তা ছড়িয়ে পরিবেশন করতে হবে।

*বিরিয়ানির স্বাদ আরো বাড়াতে স্বদেশী উদ্যোক্তার খাঁটি মসলা ব্যবহার করুণ।

Stay connected: Facebook   LinkedIn

গরুর মাংসের কালাভুনা রেসিপি

গরুর মাংসের কালাভুনা রেসিপি | Recipe Of Kala Vuna

গরুর মাংসের কালাভুনা রেসিপি | Recipe Of Kala Vuna

চট্টগ্রামের বিখ্যাত গরুর মাংসের কালা ভুনা রান্নার কথা না বললেই নয়। ঢাকার নানান হোটেলে খাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে যাদের তাদের কাছে কালা ভুনা ভালোই পছন্দের। অসম্ভব মজাদার এই খাবারটির জন্ম স্থান চট্টগ্রাম, তাই হয়তো চট্টগ্রামের কালো ভুনা স্বাদে- ঐতিহ্যে অন্য সবার চাইতে আলাদা। শোনা গেছে সেখানে শুধুমাত্র এই কালা ভুনা রান্নার জন্য স্পেশাল বাবুর্চিও আছে, যাদের ডাক পড়ে বাইরে বিভিন্ন জায়গায়! আর চট্টগ্রামের বিয়ে বাড়িতে খাবারের মেনু তো কালো ভুনা ছাড়া কল্পনাই করা যায়না। কালা ভুনার এত সুনাম দেখে নিশ্চয়ই এখন ভাবছেন কিভাবে তা রান্না করা হয়? চিন্তা নেই, আপনাদের জন্যই শেয়ার করছি বিখ্যাত এই গরুর মাংসের রেসিপি। তৈরি করুণ বাড়িতেই চট্টগ্রামের বিখ্যাত গরুর মাংসের কালা ভুনা। ঘরে বসেই দেখে নিন স্বদেশী উদ্যোক্তার গরুর মাংসের নানা রকম রেসিপি। ঘরে বসে স্বাদ নিন গরুর মাংসের কালা ভুনার।

উপকরণ-১:

গরুর মাংস চার কেজি, পেঁয়াজবাটা দুই কাপ, রসুনবাটা পৌনে এক কাপ, আদাবাটা আধা কাপ, বাদামবাটা সিকি কাপ, সাদা সরিষাবাটা আধা কাপ, মরিচ গুঁড়া ৩ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া ২ টেবিল চামচ, জিরা গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, ধনে গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, টকদই ২ কাপ, সরিষার তেল ১ কাপ, লবণ ও গরমমসলা পরিমাণমতো।

উপকরণ-২:

পেঁয়াজ কুচি ২ কাপ, সয়াবিন তেল ৩ কাপ, গরমমসলা টালা গুঁড়া ২ টেবিল চামচ, গোলমরিচ টালা গুঁড়া ২ টেবিল চামচ, জায়ফল টালা গুঁড়া ১টি, জয়ত্রী টালা গুঁড়া ১ টেবিল চামচ ও কাঁচা মরিচ ১০ থেকে ১২টি।

গরুর মাংসের কালাভুনা রেসিপি প্রণালি:

১ নম্বর উপকরণ মাংসের সঙ্গে মেখে চুলায় দিয়ে রান্না করতে হবে। সেদ্ধ হওয়ার পর জন্য প্রয়োজনে ১ কাপ গরম পানি দিতে হবে। মাংস সেদ্ধ হলে নামিয়ে নিতে হবে। অন্য সসপ্যানে ২ নম্বর উপকরণের তেল গরম করে মসলাগুলো দিয়ে দিতে হবে। এগুলো একটু বাদামি হলে গরুও মাংস ঢেলে দিতে হবে। তেলের ওপর অনেকক্ষণ কষিয়ে কালো হয়ে এলে ২ নম্বরের উপকরণগুলো দিয়ে আরেকটু নেড়ে নামিয়ে নিতে হবে। এরপর ভাত, খিচুড়ি বা পোলাওয়ের সঙ্গে পরিবেশন।

*কালা ভুনার স্বাদ আরো বাড়াতে স্বদেশী উদ্যোক্তার খাঁটি সরিষার তেল ব্যবহার করুণ।

Stay connected: Facebook   LinkedIn

চট্টগ্রামের বিখ্যাত মেজবানি রেসিপি

চট্টগ্রামের বিখ্যাত মেজবানি রেসিপি | Recipe Of Mejbani

চট্টগ্রামের বিখ্যাত মেজবানি রেসিপি | Recipe Of Mejbani

চট্টগ্রামের ঐতিহ্য মেজবান। অনেকে মেজবানি মাংস খুব পছন্দ করেন। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী খাবার হওয়ায় বাইরের শহরগুলোর অনেকেই এটা রান্না করতে পারেন না। কেউ কেউ মনে করেন, মেজবানি মাংস রান্না করা কঠিন কাজ। মোটেও না, দেখে নিন কত সহজে মেজবানি মাংস রান্না করা যায়।

উপকরণ:

গরুর মাংস- দেড় কেজি (হাড় ও চর্বিসহ), সরিষার তেল- আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি- ১ কাপ, টমেটো- ২টি (মাঝারি করে কাটা), কাঁচামরিচ- কয়েকটি, গরম মসলার গুঁড়া- ১ চা চামচ

মেজবানি মসলা তৈরির উপকরণ:

আস্ত জিরা- ১ টেবিল চামচ, সাদা সরিষা- ১/২ টেবিল চামচ, ধনিয়া- ১ টেবিল চামচ, মৌরি- ১/২ টেবিল চামচ, শুকনো মরিচ- কয়েকটি, মেথি- ১ চা চামচ, জয়ত্রী- ছোট ২টি, জয়ফল- ১টি, রাঁধুনি- ১ চা চামচ, পোস্তদানা- ১ টেবিল চামচ

মাংস মাখানোর মসলা তৈরির জন্য:

লাল মরিচ গুঁড়া- ২ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া- ১/২ টেবিল চামচ, এলাচ- কয়েকটি, কালো এলাচ- ১টি, তারা মৌরি- ১টি, লবঙ্গ- ৫টি, দারুচিনি- ২টি (মাঝারি), গোলমরিচ- ১৫টি, তেজপাতা- ২টি, লবণ- ১ টেবিল চামচ, আদা-রসুন বাটা- ৩ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বাটা- ৪ টেবিল চামচ, বাদাম বাটা- ২ টেবিল চামচ, সরিষার তেল- ২ টেবিল চামচ।

চট্টগ্রামের বিখ্যাত মেজবানি রেসিপি প্রস্তুত প্রণালি:

পোস্টদানা বাদে মেজবানি মসলা তৈরির উপকরণগুলো সব একটি শুকনা প্যানে অল্প আঁচে চুলায় টেলে নিন। টালা মসলার সঙ্গে ১ টেবিল চামচ পোস্তদানা দিয়ে সব একসঙ্গে ব্লেন্ড করুন।

একটি বড় বাটিতে মাংস নিন। মেজবানি মসলা ও মাংস মাখানোর মসলা সব দিয়ে মেখে নিন মাংস। চুলায় প্যান বসিয়ে সরিষার তেল গরম করুন। তেল গরম হলে পেঁয়াজ কুচি লাল করে ভেজে নিন। পেঁয়াজ লাল হয়ে গেলে টমেটো কুচি দিয়ে ভাজুন একসঙ্গে। টমেটো নরম হয়ে গেলে মাখিয়ে রাখা মাংস দিয়ে দিন প্যানে।

ভালো করে নেড়েচেড়ে প্যান ঢেকে দিন। ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। মাঝে দুই-একবার নেড়ে দিতে হবে। মাংস ভালোভাবে কষানোর পর ২ কাপ পানি দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিন প্যান। চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। প্রায় ৪০ মিনিট অপেক্ষা করুন মাংস সেদ্ধ হওয়ার জন্য।

মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে গরম মসলার গুঁড়া ও কয়েকটি আস্ত কাঁচামরিচ দিয়ে নেড়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন গরম গরম।

 

Stay connected: Facebook   LinkedIn

কালোজিরার ঔষধি গুন

কালোজিরার ঔষধি গুন | Health Benefits Of Blackseed

কালোজিরার ঔষধি গুন | Health Benefits Of Blackseed

কালোজিরা আমাদের সকলের পরিচিত। কালোজিরা একটি মাঝারী আকৃতির মৌসুমী গাছ। এই গাছের একবার ফুল ও ফল হয়। কালোজিরার ইংরেজি নাম Fennel flower। এর বৈজ্ঞানিক নাম Nigella Sativa Linn। এই গাছের স্ত্রী, পুরুষ দুই ধরণের ফুল হয়। সাধারণত নীলচে সাদা (জাত বিশেষে হলুদাভ) রং হয়। এই ফুল পাঁচটি পাঁপড়ি বিশিষ্ট। কিনারায় একটা রাড়তি অংশ থাকে। তিন-কোনা আকৃতির কালো রং এর বীজ হয়। গোলাকার ফল হয় এবং প্রতিটি ফলে ২০-২৫ টিবীজ থাকে। কালোজিরা আয়ুর্বেদীয় , ইউনানী, কবিরাজী ওলোকজ চিকিৎসায় ব্যবহার হয়। মশলা হিসাবেও ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে। নিমকি বা কিছু তেলে ভাজা খাবারে ভিন্ন ধর্মী স্বাদ আনতে কালোজিরা বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়া অনেকেই কালজিরার ভর্তা খেয়ে থাকেন। অনেকে আবার কালোজিরা খেতে পছন্দ করেন না। কিন্তু কালোজিরার ব্যবহারে খাবারে একটু ভিন্ন ধরনের স্বাদ নিয়ে আসে। যা কোন সীমাবদ্ধতা নেয়। এটি পাঁচ ফোড়নের একটি উপাদান। বীজ থেকে পাওয়া তেল। কালোজিরার বীজ থেকে তেল পাওয়া যায়। যা আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারী।

ইসলাম ধর্মে গুরুত্ব:

ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা কালোজিরাকে একটি অব্যর্থ রোগ নিরাময়ের উপকরণ হিসাবে বিশ্বাস করে। এর সাথে একটি হাদিসজড়িত আছে। হাদিসটি হলো— ‘..আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহিওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: “এ কালোজিরা সাম ব্যতীত সমস্ত রোগের নিরাময়। আমি বললাম: সাম কি? তিনিবললেন: মৃত্যু!” আমাদের আধুনিক ডাক্তারিশাস্ত্র আর ধর্মীয় অনুভূতি যাই বলি না কেন কালোজিরা সবখানে স্বমহিমায় উজ্জ্বল। চলুন জেনে নেওয়া যাক কালোজিরা মধ্যে লুকিয়ে হাজারো রহস্যময় গুনাগুন
কালজিরার তেলে বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান বিদ্যমান আছে লিনোলিক, অলিক, স্টিয়ারিক, লিনোলিনিক,এসিড, প্রোটিন, নিজেলোন, গ্লুটামিক এসিড। এছাড়াও রয়েছে নিজেলিন, পটাসিয়াম, ফসফরাস, কেলসিয়াম, সোডিয়াম, মেগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, আয়রন,জিংক।
কালোজিরার তেলের ব্যবহার বিধি
স্মরণ শক্তি বৃদ্ধিতে:
এক চা চামচ পুদিনা পাতার রস বা কমলার রস বা এক কাপ রঙ চায়ের সাথে এক চা চামচ কালোজিরার তেল মিশিয়ে দিনে তিনবার করে নিয়মিত খেতে হবে তাহলে ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে। এভাবে খেলে দুশ্চিন্ত দূর হবে। এছাড়া কালোজিরা মেধার বিকাশের জন্য কাজ করে দ্বিগুণ হারে। কালোজিরা নিজেই একটি অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিসেপটিক। মস্তিস্কের রক্ত সঞ্চলন বৃদ্ধির মাধ্যমে স্মরণ শক্তি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।

মাথা ব্যাথা নিরাময়ে:

হঠাৎ মাথা ব্যথা হলে ১/২ চা চামচ কালোজিরার তেল মাথায় ভালোভাবে মালিশ করতে হবে এবং এক চা চামচ কালোজিরার তেল সমপরিমাণ মধুসহ দিনে তিনবার করে খেতে হবে। এটা ২/৩ সপ্তাহ খেলে ভাল হবে। এছাড়া মাথা ব্যথায় কপালের উভয় চিবুকে ও কানের চারিপাশে প্রতিদিন ৩/৪ বার কালোজিরা তেল মালিশ করলে উপকার পাওয়া যাবে।
সর্দি সারাতে:
এক চা চামচ কালোজিরার তেল সমপরিমাণ মধু বা এক কাপ রং চায়ের সাথে মিশিয়ে দৈনিক ৩বার খেতে হবে এবং রোগ সেরে না যাওয়া পর্যন্ত মাথায় ও ঘাড়ে মালিশ করতে হবে। এছাড়া এক চা-চামচ কালোজিরার সাথে তিন চা-চামচ মধু ও দুই চা-চামচ তুলসী পাতার রস মিশিয়ে খেলে জ্বর, ব্যথা, সর্দি-কাশি দূর হবে। সর্দি বসে গেলে কালিজিরা বেটে কপালে প্রলেপ দিন। একই সাথে পাতলা পরিষ্কার কাপড়ে কালিজিরা বেঁধে শুকতে হবে, শ্লেষ্মা তরল হয়ে ঝরে পড়বে। আরো দ্রুত ফল পেতে বুকে ও পিঠে কালিজিরার তেল মালিশ করতে হবে।
বাতের ব্যাথা দূরীকরণে:
বাতের ব্যথা হলে সেখানে ভাল করে ধুয়ে পরিষ্কার করে তাতে কালোজিরার তেল মালিশ করতে হবে। এক চা- চামচ কাঁচা হলুদের রসের সাথে সমপরিমাণ কালোজিরার তেল সমপরিমান মধু বা এক কাপ রং চায়ের সাথে দৈনিক ৩বার খেতে হবে এটা ২/৩সপ্তাহ খেতে হবে। তাহলে ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে।

বিভিন্ন প্রকার চর্মরোগ সারাতে:

যেখানে চর্ম রোগ সেই আক্রান্ত স্থানে ভাল করে ধুয়ে পরিষ্কার করে তাতে কালোজিরার তেল মালিশ করতে হবে। এক চা চামচ কাঁচা হলুদের রসের সাথে সমপরিমাণ কালোজিরার তেল, সমপরিমান মধু বা এক কাপ রং চায়ের সাথে দৈনিক ৩বার খেতেও হবে এটা ২/৩ সপ্তাহ খেতে হবে।

ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রনে রাখতে:
প্রতিদিন সকালে রসুনের দুটি কোষ চিবিয়ে খেয়ে এবং সমস্ত শরীরে কালোজিরার তেল মালিশ করে সূর্যেরতাপে কমপক্ষে আধা ঘন্টা বসে থাকতে হবে। এবং এক চা-চামচ কালোজিরার তেল সমপরিমাণ মধুসহ প্রতি সপ্তাহে ২/৩ দিন খেতে হবে ফলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ থাকবে। এছাড়া কালোজিরা বা কালোজিরা তেল বহুমুত্র রোগীদের রক্তের শর্করার মাত্রা কমিয়ে দেয় এবং নিম্ন রক্তচাপকে বৃদ্ধি করে উচ্চ রক্তচাপকে হ্রাস করে।
অর্শ রোগ নিরাময়ে:
এক চা-চামচ মাখন ও সমপরিমাণ তেল তিলের তেল, এক চা-চামচ কালোজিরার তেলসহ প্রতিদিন খালি পেটে ৩/৪ সপ্তাহ খেতে হবে।
শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি রোগ সারাতে:
যারা হাঁপানী বা শ্বাসকষ্ট জনিত সমসসায় ভুগছেন। তাদের জন্য কালোজিরা অনেক বেশি উপকারী। প্রতিদিন কালোজিরার ভর্তা খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। কালোজিরা হাঁপানি বা শ্বাস কষ্টজনিত সমস্যা উপশম করবে। এছাড়া এক কাপ চা-চামচ কালোজিরার তেল, এক কাপ দুধ বা রং চায়ের সাথে দৈনিক ৩বার করে নিয়মিত খেলেও অনেক উপকার হবে।

ডায়বেটিক নিয়ন্ত্রণে:

ডায়াবেটিকদের রোগ উপশমে বেশ কাজে লাগে কালিজিরা। এক চিমটি পরিমাণ কালিজিরা এক গ্লাস পানির সাথে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে থাকলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে। এই কালোজিরা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখবে। এছাড়া এক কাপ চা-চামচ কালোজিরার তেল, এক কাপ রং চা বা গরম ভাতের সাথে মিশিয়ে দৈনিক ২বার করে নিয়মিত খেলে একশত ভাগ ডায়বেটিক নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
যৌন শক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে:
কালোজিরা নারী পুরুষ উভয়ের যৌনক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। প্রতিদিন কালোজিরা খাবারের সাথে খেলে পুরুষের স্পার্ম সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং পুরুষত্বহীনতা থেকে মুক্তির সম্ভাবনা তৈরি করে মধ্যপ্রাচ্যে প্রচলিত আছে যে, কালিজিরা যৌন ক্ষমতা বাড়ায় এবং পুরুষত্বহীনতা থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করে। একচা-চামচ মাখন, এক চাচামচ জাইতুন তেল সমপরিমাণ কালোজিরার তেল ও মধুসহ দৈনিক ৩বার ৪/৫ সপ্তাহ ধরে খেলে অনেক উপকার হবে। তবে পুরানো কালোজিরা তেল স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক।
অনিয়মিত মাসিক সারাতে:
এক কাপ কাঁচা হলুদের রস বা সমপরিমাণ আতপ চাল ধোয়া পানির সাথে এক কাপ চা-চামচ কালোজিরার তেল মিশিয়ে দৈনিক ৩বার করে নিয়মিত খেতে হবে। তাহলে অনেক ভাল কাজ হবে।

মায়ের দুধ বৃদ্ধি করতে:

যেসব মায়েদের বুকে পর্যাপ্ত দুধ নেই, তাদের মহৌষধ কালিজিরা। মায়েরা প্রতি রাতে শোয়ার আগে ৫-১০ গ্রাম কালিজিরা মিহি করে দুধের সাথে খেতে থাকতে হবে। মাত্র ১০-১৫ দিনে দুধের প্রবাহ বেড়ে যাবে। এছাড়া এ সমস্যা সমাধানে কালিজিরা ভর্তা করে ভাতের সাথে খেলেও ভাল হবে। এছাড়া একচা-চামচ কালোজিরার তেল সমপরিমাণ মধুসহ দৈনিক ৩বার করে নিয়মিত খেতে হবে। যা শতভাগ উপকারি।
গ্যাষ্ট্রীক বা আমাশয় নিরাময়ে:
এক চা-চামচ তেল সমপরিমাণ মধু সহ দিনে ৩বার করে ২/৩ সপ্তাহ ধরে খেতে হবে। তাহলে গ্যাস্টিক বা আমাশয়ের জন্য আর কষ্ট পেতে হবে না।

ত্বকের আদ্রতার বাড়াতে:

শীতকালে ত্বকের আদ্রতার জন্য বডি লোশনের পরিবর্তে শুধু কালোজিরার তেল অথবা জাইতুন (অলিভওয়েল) তেল এর সাথে কালোজিরার তেল মিশিয়ে সারা শরীরে সারা শরীরে মালিশ করতে হবে। যা আপনার বা আপনার শিশুর ত্বকের আদ্রতা ও লাবণ্যময় বৃদ্ধি করবে এবং চর্মরোগের ঝুঁকি কমাবে। বিশেষভাবে শিশুর ত্বকের জন্য এই পদ্ধতিতে সারা বছর ব্যবহার করতে পারেন।
জন্ডিস বা লিভারের বিভিন্ন সমস্যার দূরীকরণে:
লিভারের সুরক্ষায় ভেষজটি অত্যন্ত অসাধারন। লিভার ক্যান্সারের জন্য দায়ী আফলা টক্সিন নামক বিষ ধ্বংস করে কালিজিরা। যদি এক গ্লাস ত্রিপলার শরবতের সাথে এক চা-চামচ কালোজিরার তেল দিনে ৩বার করে ৪/৫ সপ্তাহ খেতে পারেন তাহলে অনেক ভাল ফলাফল পাবেন।

স্বাস্থ্য ভাল রাখতে:
মধুসহ প্রতিদিন সকালে কালোজিরা সেবনে স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও সকল রোগ মহামারী হতে রক্ষা পাওয়া যায়।
হজমের সমস্যা দূরীকরণে
হজমের সমস্যায় এক-দুই চা-চামচ কালিজিরা বেটে পানির সাথে খেতে হবে। এভাবে প্রতিদিন দু-তিনবার খেলে এক মাসের মধ্যে হজমশক্তি বেড়ে যাবে। পাশাপাশি পেট ফাঁপাভাবও দূর হবে।
চুল পড়া বন্ধ করতে:
চুল পড়া সমস্যা অনেক বড় একটি সমস্যা। এই ক্ষেত্রে কালিজিরা খেয়ে যেতে হবে, চুল পর্যাপ্ত পুষ্টি পাবে। ফলে চুল পড়া বন্ধ হবে। আরো ফল পেতে চুলের গোড়ায় এর তেল মালিশ করতে হবে।

দেহের সাধারণ উন্নতি:

নিয়মিত কালোজিরা সেবনে শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে সতেজ করে ও সার্বিকভাবে স্বস্থ্যের উন্নতি সাধন করে। অরুচি, উদরাময়, শরীর ব্যথা, গলা ও দাঁতের ব্যথা, মাইগ্রেন, চুলপড়া, সর্দি,কাশি, হাঁপানি নিরাময়ে কালোজিরা অনেক সাহায্য করে থাকে। তাছাড়া ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কালোজিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
দাঁত ব্যথা দূরীকরণে:
দাঁতে ব্যথা হলে কুসুম গরম পানিতে কালোজিরা দিয়ে কুলি করলে ব্যথা কমে যাবে। কালোজিরা মুখের যেমন জিহ্বা, তালু, দাঁতের মাড়ির জীবাণু মেরে ফেলে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে:
কালোজিরা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। ফলে নিয়মিত কালোজিরা খেলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সতেজ থাকে। এতে করে যে কোন জীবানুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেহকে প্রস্তুত করে তোলে এবং সার্বিকভাবে স্বস্থ্যের উন্নতি করে। ১ চামচ কালোজিরা অথবা কয়েক ফোটা কালোজিরার তেল ও ১চামচ মধুসহ প্রতিদিন খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।
কালোজিরার অপকারিতা:
গর্ভাবস্থায় ও দুই বছরের কম বয়সের বাচ্চাদের কালোজিরার তেল খাওয়ানো উচিত নয়। তবে বাহ্যিক ভাবে ব্যবহার করা যাবে।

 

Stay connected: Facebook   LinkedIn

বেগুনি বানানোর সহজ রেসিপি

বেগুনি বানানোর সহজ রেসিপি | Recipe Of Beguni

বেগুনি বানানোর সহজ রেসিপি | Recipe Of Beguni
বাড়িতে বেগুনি তৈরি করলে অনেকক্ষেত্রেই তা মচমচে হয় না। আর তাই মচমচে বেগুনি খেতে অনেকেই বাইরে থেকে কিনে আনেন। যা মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। রেসেপি জানা থাকলে আপনিও তৈরি করতে পারেন সুস্বাদু মচমচে বেগুনি। রমজান মাসে ইফতারির সময় বেগুনি একটি কমন আইটেম । রোজার মাসে প্রতিটি স্টলে বেগুনি শোভা পায় । বাজারে যে বেগুনি পাওয়া যায় তাতে বেসনের পরিমাণ অনেক কম থাকে আর বেগুনও কম দেওয়া হয় তাই খেতে অতটা স্বাদ লাগে না । তাই দেরি না করে বাসাতেই তৈরি করে ফেলুন মচমচে ও সুস্বাদু বেগুনি ।
বেগুনি বানানোর সহজ রেসিপি উপকরণঃ
২. স্বদেশী উদ্যোক্তা দ্বারা সংগৃহীত চালের গুঁড়া আধা কাপ
৩. লম্বা বেগুন ১-২টি
৬. বেকিং পাউড়ার এক চা-চামচ
৭. পেঁয়াজ বাটা এক চা-চামচ
৮. রসুন বাটা এক চা-চামচ
৯. আদা বাটা এক চা-চামচ
১০. লবণ পরিমাণ মতো
১১. তেল (ভাজার জন্য) পরিমাণমত
‪বেগুনি বানানোর সহজ রেসিপি প্রণালী:
বেগুন ও তেল বাদে বাকি সব উপকরণ একসঙ্গে পানি দিয়ে মিশিয়ে থকথকে গোলার মত করে ফেলুন। এরপর কিছু সময় ঢেকে রাখুন। বেগুন পাতলা টুকরা করে কেটে সামান্য লবণ ও হলুদ মাখিয়ে রাখুন। এরপর কড়াইয়ে তেল গরম করে বেগুন বেসনের গোলায় ডুবিয়ে ডুবো তেলে ভাজতে শুরু করুন আস্তে আস্তে। খেয়াল রাখবেন যেন মচমচে বাদামি রঙ করে ভাজা হয়। এরপর তেল থেকে উঠিয়ে কিচেন টাওয়েল অথবা কাগজের ওপর রাখতে হবে যাতে অতিরিক্ত তেল শুষে নেয়। তৈরি হয়ে গেল গরমাগরম মজাদার বেগুনি !
Stay connected: Facebook   LinkedIn